এসএসসি ২০২৫ এ ৬ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ফেল – শিক্ষা বোর্ড কি উদ্যোগ নেবে?
সম্প্রতি প্রকাশিত এসএসসি ২০২৫ পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর ৬ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এটি একটি বড় সংখ্যা, গত ১৫ বছরের ইতিহাসে যা আগে কখনো হয়নি। এ কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গভীর হতাশা দেখা দিয়েছে এবং তারা বারবার প্রশ্ন করছে –আমরা কি কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবো না?
প্রথম ধাপের আবেদন প্রক্রিয়া শেষ
কলেজ ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপের আবেদন ও আবেদন সময়সীমা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। যদিও প্রথমে নির্ধারিত সময়সীমা পরবর্তীতে বাড়ানো হয়েছিল, কিন্তু সেই সুযোগও এখন শেষ। ফলে যারা ফেল করেছে তারা ভর্তি নিয়ে এখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছে।
শিক্ষার্থীদের যুক্তি হলো -কলেজ ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রতিবার প্রায় ১৩ থেকে ১৫ লক্ষ আসন খালি থেকে যায়। অথচ লাখ লাখ শিক্ষার্থী ফেল করার কারণে কলেজে ভর্তি হতে পারে না। তাহলে কি এই খালি আসনগুলো কোনোভাবেই ব্যবহার করা সম্ভব নয়?
শিক্ষার্থীদের দাবি –সাপ্লিমেন্টারি বা বিকল্প ব্যবস্থা
ফেল করা শিক্ষার্থীরা বলছে,
“আমরা যদি মাত্র এক বা দুই বিষয়ে ফেল করি, তাহলে কেন আমাদেরকে বাদ দেওয়া হবে? যদি সাপ্লিমেন্টারি বা পুনঃপরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আমরা দ্রুত পাশ করে ভর্তি হতে পারি।”
এই দাবিকে ঘিরে ইতোমধ্যে অনেক শিক্ষক, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও শিক্ষাবিদ সোশ্যাল মিডিয়ায় বক্তব্য রেখেছেন। রিফাদ একাডেমি, শোভন স্টাডি, ওবি স্যার, তানভীর স্যারসহ অনেকে এ বিষয়ে ভিডিও প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু শিক্ষা বোর্ড এখনও স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তাদের মতে -যারা পাশ করেছে তারাই কেবল কলেজ ভর্তির জন্য যোগ্য।
পূর্বের একটি প্রস্তাবিত নিয়ম
আমরা জানি ১ বছর আগে (২০২৪ সালের দিকে) এমন একটি নিয়ম প্রস্তাবিত হয়েছিল যে –
- যারা ১-২ বিষয়ে ফেল করবে তারা কলেজে ভর্তি হতে পারবে।
- ভর্তি থাকার পাশাপাশি তারা পরবর্তী পরীক্ষায় অংশ নেবে।
- পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তারা কলেজের পাঠ্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে।
- আর যদি পাশ করতে না পারে, তবে নতুন ব্যাচের সাথে পুনরায় পরীক্ষা দিতে হবে।
তবে নতুন কারিকুলামের কারণে এ নিয়মটি কার্যকর হয়নি। এখন প্রশ্ন উঠছে – শিক্ষা বোর্ড কি চাইলে ২০২৫ সাল থেকেই এ ধরনের ব্যবস্থা চালু করতে পারে না?
বাস্তব চিত্র –সিট খালি, শিক্ষার্থী বঞ্চিত
- ফেল শিক্ষার্থী: ৬ লক্ষাধিক
- খালি সিট: ১৩ লক্ষাধিক
২০২৫ এসএসসি আপডেট
অর্থাৎ দ্বিগুণ সিট খালি থাকা সত্ত্বেও লাখ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে অনেকের দাবি, শিক্ষা বোর্ড চাইলে ফেল করা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ভর্তি ব্যবস্থা বা পুনঃমূল্যায়ন প্রক্রিয়া চালু করতে পারে। এতে একদিকে সিট পূরণ হবে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীরাও শিক্ষার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবে।
সম্ভাব্য সমাধান
শিক্ষার্থীদের প্রস্তাব অনুযায়ী কিছু সমাধান হতে পারে –
- সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা: ফেল করা শিক্ষার্থীদের দ্রুত পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ দেওয়া।
- শর্তসাপেক্ষ ভর্তি: ফেল করা শিক্ষার্থীরা কলেজে ভর্তি থাকবে, তবে পাশ না করলে ভর্তি বাতিল হবে।
- পুনঃমূল্যায়ন বা গ্রেস মার্কস: ন্যূনতম পার্থক্যে ফেল করা শিক্ষার্থীদের পাশ করানো।
কলেজ ভর্তি ২০২৫
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, ভিডিও, সংবাদ -সবকিছু মিলিয়ে বোর্ডের কাছে বার্তা স্পষ্ট: ৬ লক্ষ ফেল ও ১৩ লক্ষ খালি সিট – এই বৈষম্য দূর করতে কিছু একটা করতেই হবে।
শিক্ষা বোর্ড যদি দ্রুত কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেয়, তাহলে হাজারো শিক্ষার্থী আবারও নতুন করে স্বপ্ন দেখতে পারবে। আর যদি কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তবে এ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষার বাইরে থেকে যাবে, যা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় ক্ষতি হবে।
১/২ বিষয় ফেল করা শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত