কলেজ ভর্তির সিলেকশন কিভাবে হবে ২০২৫?
এসএসসি ২০২৫ পাশ করার পর শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ধাপ হলো একাদশ শ্রেণিতে কলেজে ভর্তি হওয়া। তবে অনেকেই জানেন না যে, কে কোন কলেজে ভর্তি হবে তা নির্ধারণ হয় নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ও মানদণ্ড অনুযায়ী, যাকে আমরা বলি সিলেকশন প্রসেস।
এই আর্টিকেলে আমরা জানবো- কলেজ ভর্তির সিলেকশন প্রক্রিয়া কীভাবে কাজ করে, মেধা তালিকা কীভাবে তৈরি হয় এবং তোমাকে কীভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
কলেজ ভর্তির সিলেকশন বলতে কী বোঝায়?
একাধিক কলেজে অনলাইনে আবেদন করার পর, শিক্ষার্থীরা চায়- তাদের পছন্দের কলেজে যেন ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু সকলের সেই সুযোগ হয় না।
তাদের এসএসসি ফলাফল, কলেজ চয়েস, আসন সংখ্যা ইত্যাদি তথ্যের ভিত্তিতে একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম দিয়ে নির্ধারণ করা হয়, কে কোন কলেজে সুযোগ পাবে। এটাকেই বলে সিলেকশন প্রসেস।
কলেজ ভর্তির সিলেকশন কীভাবে হবে?
(২০২৫ সালের নিয়ম অনুযায়ী)
১. মেধা ভিত্তিক নির্বাচন (Merit Based Selection)
প্রথমেই আবেদনকারীর SSC GPA (Grade Point Average) অনুযায়ী মেধা তালিকা তৈরি করা হবে।
সাধারণত যে শিক্ষার্থীর GPA বেশি, সে অগ্রাধিকার পায় পছন্দের কলেজে।
বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে চাইলে GPA ৪.৫ বা ৫.০০ বেশি প্রয়োজন হয়।
মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় তুলনামূলক কম GPA-তেও ভর্তি সম্ভব।
২. কলেজ পছন্দ (College Choice Priority)
তুমি যে কলেজগুলোকে ১ম, ২য়, ৩য়… করে পছন্দক্রমে সাজিয়ে অনলাইনে আবেদন করবে, সেই ক্রম অনুযায়ী সিলেকশন হবে।
যদি তোমার GPA অনুযায়ী ১ম পছন্দে সুযোগ না পাও, তাহলে ২য়, তারপর ৩য় – এভাবে নিচে নামতে থাকে।
৩. আসন সংখ্যা (College Seat Capacity)
প্রত্যেক কলেজের একটি নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা থাকে।
যদি কোনো কলেজে আবেদনকারীর সংখ্যা > আসন সংখ্যা, তখন GPA অনুযায়ী যোগ্য শিক্ষার্থীরা সেই কলেজে নির্বাচিত হয়।
৪. কোটাভিত্তিক বিবেচনা
সরকার নির্ধারিত কিছু কোটা ব্যবস্থা রয়েছে, যেমন:
- মুক্তিযোদ্ধা কোটাভুক্ত আবেদনকারী
- উপজাতি/অন্তর্ভুক্ত জনগোষ্ঠী
- প্রতিবন্ধী কোটাভুক্ত
- নিজ কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার
এই কোটাগুলো সিলেকশনে প্রভাব ফেলতে পারে।
৫. মেধা তালিকা ও নিশ্চয়ন (Merit List & Confirmation)
- একাধিক ধাপে মেধা তালিকা প্রকাশিত হয় (১ম, ২য়, ৩য়)
- প্রতিবার যারা সুযোগ পায়, তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিশ্চয়ন করতে হয় (Confirm)
- নিশ্চয়ন না করলে তাদের সিলেকশন বাতিল হয়ে যাবে।
উদাহরণ:
ধরো, তুমি SSC GPA 5.00 পেয়েছো এবং ঢাকার একটি সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে চাও।
তুমি কলেজ পছন্দক্রমে Dhaka College, Rajuk বা অন্য কোনো কলেজ চয়েজ দিয়েছো। তাহলে প্রথমে দেখা হবে তোমার GPA, তারপর ঐ কলেজে কতজনের আবেদন হয়েছে, তারপর তোমার অবস্থান কেমন। যদি সব ঠিক থাকে তবে তুমি তোমার ১ম পছন্দেই সুযোগ পাবে।
আমার মতে:
বর্তমান ডিজিটাল পদ্ধতিতে কলেজে ভর্তি হওয়া অনেক সহজ ও স্বচ্ছ হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের উচিত নিজের SSC ফলাফল, আগ্রহ ও ভবিষ্যতের লক্ষ্য অনুযায়ী কলেজ ও বিভাগ নির্বাচন করা। আমি মনে করি, GPA যেটাই হোক, সঠিক তথ্য ও বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নিলে সকলেই তার জন্য উপযুক্ত কলেজে ভর্তি হতে পারবে।