জেলা শহরের বাইরে কলেজে সুযোগ সুবিধা

বিভাগীয় শহরের বাইরে পড়লে কেমন সুবিধা ও অসুবিধা হয়?

এসএসসি বা এইচএসসি পাস করার পর অনেক শিক্ষার্থী সিদ্ধান্ত নেয়-বিভাগীয় শহরের বাইরের কলেজে ভর্তি হবে কিনা। কেউ কেউ পরিবারের কারণে নিজের জেলা বা উপজেলা শহরের কলেজে পড়াশোনায় আগ্রহী থাকলেও, অনেকেই ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে ভর্তি হওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ে। তবে বিভাগীয় শহরের বাইরে পড়াশোনা করলেও রয়েছে কিছু স্পষ্ট সুবিধা ও কিছু সীমাবদ্ধতা। আসুন জেনে নিই সেগুলো বিস্তারিতভাবে।

সুবিধাগুলো:

মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনার সুযোগ

বিভাগীয় শহরের বাইরের কলেজগুলোতে সাধারণত পড়াশোনার চাপ কম, প্রতিযোগিতা তুলনামূলকভাবে সীমিত। এতে শিক্ষার্থীরা তুলনামূলকভাবে কম চাপ নিয়ে, মনোযোগ সহকারে প্রস্তুতি নিতে পারে।

পরিবারের পাশে থাকা যায়

নিজ এলাকায় বা নিকটবর্তী কলেজে ভর্তি হলে শিক্ষার্থী পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সহায়তা পায়। মানসিক চাপ কম থাকে, ফলে পড়ালেখায় ভালো করা সম্ভব।

কম খরচে পড়াশোনা

ঢাকা বা বিভাগীয় শহরে থাকার খরচ যেমন বাসা ভাড়া, খাবার, পরিবহন ইত্যাদি অনেক বেশি। কিন্তু নিজ এলাকায় থাকলে এ খরচ প্রায় থাকেই না। এতে অভিভাবকের আর্থিক চাপও কমে।

মানসিক প্রশান্তি

নিজ এলাকায় পড়লে শিক্ষার্থী নিজের পরিচিত পরিবেশে থাকে, যার ফলে মানসিক স্বস্তি থাকে এবং মন বসে পড়ালেখায়।

অসুবিধাগুলো:

ভালো কোচিং ও গাইডলাইনের অভাব

বিভাগীয় শহরের বাইরের কলেজগুলোতে সাধারণত অভিজ্ঞ শিক্ষকের সংখ্যা কম হয়। উন্নত মানের গাইডলাইন, ইউনিভার্সিটি ভর্তি কোচিং কিংবা সাপোর্ট সিস্টেম তুলনামূলকভাবে দুর্বল।

অনুপ্রেরণার অভাব

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যে ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ দরকার, তা অনেক সময় উপজেলা বা জেলার কলেজে পাওয়া যায় না। এতে শিক্ষার্থীর মধ্যে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহ কমে যেতে পারে।

গ্রামীণ কলেজে পড়ার ভালো দিক ও খারাপ দিক 

শিক্ষকের মানের তারতম্য

অনেক সময় অভিজ্ঞ শিক্ষক না পাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা মানসম্পন্ন পড়াশোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার প্রস্তুতি ব্যাহত হতে পারে।

ভার্সিটি অ্যাডমিশনের তথ্যসংকট

বিভাগীয় শহরের বাইরে তথ্যপ্রযুক্তি এবং আধুনিক অ্যাডমিশন রিসোর্সে অ্যাক্সেস কম থাকে। ফলে অনেক সময় সঠিক তথ্য বা প্রস্তুতির কৌশল জানা হয় না।

বিভাগীয় শহরের বাইরে পড়াশোনা করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া একেবারেই অসম্ভব নয়। বরং সঠিক পরিকল্পনা, অনলাইন রিসোর্স ও নিজ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী ভালো রেজাল্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তবে যাদের লক্ষ্য উচ্চতর প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং), তাদের উচিত ভার্সিটি ভর্তি ফোকাসড কলেজ বা পরিবেশে পড়াশোনা করা।

তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজের লক্ষ্য, পরিবারের সামর্থ্য, এবং নিজের সক্ষমতা বিবেচনা করে কলেজ নির্বাচন করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *