৫০০ মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষা
মাদ্রাসা শিক্ষায় বড় পরিবর্তন আরও ৫০০ মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষা চালু হবে
মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিক ও সময়োপযোগী করতে সরকার নতুন এক উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে আগামী বছর থেকে ধাপে ধাপে দেশের আরও ৫০০ মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষা চালু করা হবে। এর ফলে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শুধু ধর্মীয় জ্ঞানেই নয়, হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নিয়েও কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুত হতে পারবে।
শনিবার সিলেটে আয়োজিত এক বিভাগীয় সেমিনারে এসব কথা জানান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চলা এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের চাহিদাভিত্তিক দক্ষতা শেখানো হবে।
আগে কী ছিল, এখন কী হবে?
বর্তমানে দেশের প্রায় ১২০০ মাদ্রাসায় সীমিত আকারে কারিগরি শিক্ষা রয়েছে। তবে সেখানে সুযোগ ও পরিসর খুবই ছোট। নতুন করে যুক্ত হওয়া ৫০০ মাদ্রাসায় আরও বড় পরিসরে আধুনিক ট্রেড চালু করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে:
- আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)
- ইলেকট্রনিক্স
- কৃষি
- গার্মেন্টস (পোশাক শিল্প)
- মোটর মেকানিকস
বাংলাদেশ মাদ্রাসা কারিগরি শিক্ষা
এগুলো এমন কিছু ক্ষেত্র, যেগুলোতে বাস্তব জীবনে কাজের সুযোগ অনেক বেশি। ফলে, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দক্ষতা অর্জন করে চাকরি বা ব্যবসার মাধ্যমে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।
কেন এই উদ্যোগ নেওয়া হলো?
সচিব জানান, দেশে প্রতি বছর বহু শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করলেও তারা চাকরি পাচ্ছে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন প্রায় ৪০ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে, কিন্তু প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী বেকার হয়ে যাচ্ছে। কারণ, তাদের হাতে বাস্তব কোনও কাজের দক্ষতা নেই। অন্যদিকে, কারিগরি শিক্ষায় এখনো মাত্র ১৭ লাখ শিক্ষার্থী রয়েছে।
এছাড়া দেশের মাদ্রাসাগুলোতে প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। যদি তাদের মধ্যে বড় একটি অংশকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, তাহলে তারা শুধু চাকরি খুঁজবে না, নিজেরাও কাজ সৃষ্টি করতে পারবে। তাই এই উদ্যোগ সময়ের দাবি।
শুধু শিক্ষিত নয়, দক্ষ হতে হবে
ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম আরও বলেন, “শুধু পাস করে সার্টিফিকেট নিলেই হবে না। প্রতিযোগিতা করে শুধু এ প্লাস পেলেই জীবনে সফল হওয়া যাবে না। আমাদের নৈতিকভাবে ভালো হতে হবে, আর কাজ জানাটা সবচেয়ে জরুরি। একমাত্র দক্ষতাই বেকারত্ব কমাতে পারে।”
তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, “শিক্ষার মান বাড়াতে হলে শিক্ষকদের আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষতার চর্চা বাড়াতে হবে।”