এসএসসি সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা ২০২৫ কবে হবে
এসএসসি ২০২৫: রেকর্ড পরিমাণ ফেল, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার দাবি ও ভবিষ্যৎ ভাবনা
২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় দেশের ইতিহাসে রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। বিগত ১৫ বছরের মধ্যে এমন ফলাফল আগে কখনো দেখা যায়নি। এবার ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, শুধু শিক্ষার্থীদের ব্যর্থতা নয়—এর পেছনে রয়েছে নানা গাফিলতি, ভুল ও দুর্বলতা যা দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষকেই বহন করতে হবে।
ফেল করার প্রকৃত কারণ কী?
১. এক বিষয়ে পরীক্ষা, ফেল দুই বিষয়ে
অনেক শিক্ষার্থী মাত্র একটি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে, অথচ ফলাফল এসেছে দুই বিষয়ে ফেল। এর মধ্যে একটি আলোচিত ঘটনা হচ্ছে-একটি স্কুলের ৬৮ জন শিক্ষার্থীর প্র্যাকটিক্যাল নাম্বারই জমা দেওয়া হয়নি, ফলে সবাই অকৃতকার্য হয়েছে।
২. প্র্যাকটিক্যাল নম্বর যোগ না করা
অনেক জায়গায় দেখা গেছে, শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান ভুলবশত বা গাফিলতির কারণে প্র্যাকটিক্যাল নম্বর শিক্ষাবোর্ডে পাঠায়নি, যার প্রভাব সরাসরি শিক্ষার্থীদের রেজাল্টে পড়েছে।
৩. এক নাম্বারের জন্য ফেল ও এ প্লাস মিস
হাজার হাজার শিক্ষার্থী মাত্র এক নম্বরের জন্য ফেল করেছে কিংবা এ প্লাস মিস করেছে। ৭৯ নাম্বার পেয়ে ৮০ হলে এ গ্রেড পেত-এই পার্থক্যের কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে।
SSC 2025 supplementary exam update
বোর্ড চ্যালেঞ্জ ও সংশোধনের আশ্বাস
- অনেক ভুল ও বিতর্কিত ফলাফলের পর অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বোর্ড চ্যালেঞ্জ করছে।
- শিক্ষা বোর্ড আশ্বস্ত করেছে যে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।
সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার সম্ভাবনা
এসএসসি ২০২৫-এ ফেল করা ৬ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য একটি সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষাবিদদের পরামর্শ
- শিক্ষাবিদরা বলছেন-ফেল করা শিক্ষার্থীদের আরেকটি সুযোগ দেওয়া উচিত।
- যারা ইচ্ছুক, তারা সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে এবং উত্তীর্ণ হলে তাদের পাশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
- প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে।
- ১৪ জুলাই ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি শিক্ষাবোর্ড অফিসের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
একতরফাভাবে শিক্ষার্থীদের দোষ দেওয়া উচিত নয়
- শুধু শিক্ষার্থী নয়-প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, নম্বর যোগে ত্রুটি, বোর্ডের অস্পষ্ট নীতিমালাও ফলাফলের বিপর্যয়ের জন্য দায়ী।
- পূর্বের ১৫ বছরের মতো নমনীয় মূল্যায়ন না করে হঠাৎ কঠোরতা আরোপ করায় শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সুযোগ পায়নি।
শিক্ষাবোর্ড সাপ্লিমেন্টারি সিদ্ধান্ত ২০২৫
সমাধানের প্রস্তাব ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা চালু করা
দ্রুত পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আরেকটি সুযোগ দেওয়া হোক।
- সঠিক মূল্যায়ন ও নম্বর পুনর্বিবেচনা
যেসব শিক্ষার্থী ১-২ নাম্বারের জন্য ফেল করেছে বা গ্রেড মিস করেছে, সেগুলো বিশেষভাবে দেখা হোক। - সিকিউ-এমসিকিউ যৌথ মূল্যায়নের ভারসাম্য
বর্তমান মূল্যায়ন পদ্ধতিতে সিকিউ ও এমসিকিউতে পৃথকভাবে ফেল ধরা হচ্ছে, যা অনেকে সমালোচনাযোগ্য মনে করছেন।
এসএসসি ২০২৫-এ ফেল করা শিক্ষার্থীরা হতাশার মাঝে রয়েছে ঠিকই, তবে তাদের প্রতি সহানুভূতি ও দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসা জরুরি। শিক্ষা বোর্ড চাইলে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে পারে।