শিক্ষাবোর্ডের সামনে বিক্ষোভ SSC ২০২৫
এসএসসি ২০২৫ ফেল শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, স্লোগান ও বিক্ষোভ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফেল দেখানো হয়। এর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী দাবি করেছে, তাদের রেজাল্ট ভুল এসেছে অথবা এক-দুই নম্বরের জন্য ফেল দেখানো হয়েছে। এ কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থী তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন। ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা একের পর এক প্রতিবাদে নামছে।
১৩ জুলাইয়ের আন্দোলনের ঘোষণা ও বাস্তবতা
আজ ১৩ জুলাই ছিল এসএসসি ২০২৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন।
এদিন তারা রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড, বিশেষ করে ঢাকা বোর্ডের সামনে বিক্ষোভের ঘোষণা দেয়। আন্দোলনের পেছনে মূলত দুইটি পক্ষ ছিল:
- একটি পক্ষ সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার দাবি জানায়
- অন্য পক্ষ দাবি করে, এইচএসসি এডমিট কার্ড ও কাগজপত্রে ভুল সংশোধনের
দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকা বোর্ডের সামনে দুইটি গ্রুপ বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, যাতে লেখা ছিল:
- “কলেজে ভর্তি হতে চাই”
- “সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা চাই”
- “MCQ-CQ মিলিয়ে পাশ চাই”
শিক্ষার্থীদের প্রধান অভিযোগ
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী:
- এমসিকিউ অংশে মাত্র এক বা দুই নম্বর কম থাকায় তারা ফেল করেছে।
- রচনামূলক অংশে অনেকেই ৪০-৫০ এর বেশি পেয়েও ফেল দেখানো হয়েছে।
- ফলে তারা পুরো এক বছর পিছিয়ে যাচ্ছে।
তাদের দাবি, CQ-MCQ মিলিয়ে পাশের নিয়ম চালু থাকলে এত শিক্ষার্থী ফেল করত না।
ঢাকা বোর্ড SSC আন্দোলন
ফেল শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও নতুন নিয়ম নিয়ে ক্ষোভ
এবার প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থী ফেল করেছে, যা অস্বাভাবিক ও প্রশ্নবিদ্ধ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ:
- হঠাৎ করে নতুন পাশের নিয়ম চালু করে দেওয়া হয়েছে।
- কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।
- পুরাতন চিন্তাভাবনা নিয়ে পরীক্ষা দিলেও ফলাফল এসেছে নতুন নিয়মের আওতায়, যা অন্যায্য।
শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই পরিবর্তন ধাপে ধাপে, গোড়ার দিক থেকে শিক্ষাপদ্ধতির সংস্কারের মাধ্যমে আনা উচিত ছিল, যাতে তারা মানিয়ে নিতে পারত।
বোর্ড কর্তৃপক্ষের বক্তব্য ও পুলিশের ভূমিকা
বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানায়:
- শিক্ষার্থীদের একটি অংশ সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে আন্দোলনে নেমেছে।
- পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে তিন বিষয়ে ফেল?
শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন:
একজন শিক্ষার্থী কিভাবে এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে তিন বিষয়ে ফেল করে?
একটি নম্বরের জন্য একজন শিক্ষার্থী ফেল করলে সেটি শিক্ষার্থীর দোষ না, বরং সিস্টেমের ব্যর্থতা। তারা আরও বলেন:
“৭৯ পেয়ে যদি একজন শিক্ষার্থী ফেল করে, সে কি ৮০ পাওয়ার যোগ্য নয়?”
“যে এক নম্বরের ঘাটতির জন্য ফেল দেখানো হয়েছে, সেই শিক্ষার্থীকে পাশ করিয়ে দিলে দেশের কি ক্ষতি হতো?”
সাপ্লিমেন্টারি SSC পরীক্ষার আবেদন
সমাধান কী হতে পারে?
শিক্ষার্থীরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু দাবি তুলেছেন:
- MCQ ও CQ মিলিয়ে পাশের নিয়ম পুনর্বহাল করা
- সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার দ্রুত আয়োজন
- ভুল রেজাল্ট সংশোধনের কার্যকর ও সহজ পদ্ধতি চালু করা
তারা মনে করেন, শিক্ষা বোর্ড চাইলে অল্প সময়ের মধ্যেই এই সংকটের যৌক্তিক সমাধান দিতে পারে। এই আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, শুধুমাত্র ফলাফলের ভুল নয় বরং পুরো মূল্যায়ন ব্যবস্থার উপর তাদের আস্থা সংকট তৈরি হয়েছে।
এখন দায়িত্ব শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।
তাদের উচিত, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় দ্রুত ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, যাতে কেউ এক বছরের জন্য পিছিয়ে না পড়ে, এবং দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশ্বাস ফিরে আসে।
আমরা আশা করি, শিক্ষা বোর্ড খুব দ্রুত একটি যৌক্তিক, মানবিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে।