জিপিএ-৫ কমে গেছে কেন

২০২৫ সালে কি জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কমে যাবে?

জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যেতে পারে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে – পাওয়া যাচ্ছে এমন ধারণা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল থেকে। প্রশ্নপত্রের মান ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি থাকার ফলে এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতে পারে।

 

খাতা মূল্যায়নে কড়াকড়ি

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার খাতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পরীক্ষকদের ‘সহানুভূতির নম্বর’ না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। প্রশ্নের উত্তর সঠিক না হলে তাতে কোনো নম্বর না দিতে বলা হয়। এর ফলে রেজাল্ট স্বাভাবিকভাবেই জিপিএ-৫ এর সংখ্যা কমে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

আগের সরকারের সময়ে নম্বর বাড়ানোর অভিযোগ

বিগত সরকারের সময়ে পাসের হার ও জিপিএ-৫ বাড়িয়ে দেখানোর জন্য পরীক্ষকদের মৌখিকভাবে নম্বর বাড়িয়ে দিতে চাপ দেওয়া হতো। অনেক সময় খাতায় সঠিক উত্তর না থাকলেও পরীক্ষার্থীকে পাস করিয়ে দেওয়ার অলিখিত নিয়ম চালু ছিল।

অলিখিত নিয়মের উদাহরণ

পরীক্ষকরা জানান, আগে কেউ যদি ২০ নম্বর পেতেন, তবে তাকে পাস করিয়ে দেওয়া হতো। ৩০ পেলে ৪০ বানিয়ে ‘সি’ গ্রেড, ৫০ পেলে ৬০ বানিয়ে ‘এ মাইনাস’, আর ৭০-এর বেশি পেলে ৮০ দিয়ে জিপিএ-৫ দেওয়া হতো। এবার এই নিয়ম আর অনুসরণ করা হয়নি।

এসএসসি রেজাল্টে জিপিএ কমে গেছে

পরীক্ষকদের ওপর চাপ

একাধিক পরীক্ষক জানান, খাতা হাতে পাওয়ার পর প্রধান পরীক্ষকরা নম্বর উদারভাবে দিতে বলতেন। কেউ ফেল করলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকদের শাস্তির হুমকিও দেওয়া হতো। এতে শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে প্রকৃত মূল্যায়নের বদলে নম্বর বাড়িয়ে দিতেন।

এবার বাস্তবতাভিত্তিক মূল্যায়ন

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, “আমরা খাতা মূল্যায়নে উদার বা কঠোর নই, বরং বাস্তবতার ভিত্তিতে সঠিক মূল্যায়নেই বিশ্বাসী। আমাদের লক্ষ্য-বেশি জিপিএ-৫ নয়, মানসম্পন্ন শিক্ষার্থী তুলে আনা।”

প্রকৃত মেধার মূল্যায়নের দিকে

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, “আগে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে ফল প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মূল্যায়ন করা হয়নি। এবার আমরা প্রকৃত মেধাকে প্রাধান্য দিচ্ছি, যা দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।”

SSC GPA 5 kome giche keno

শেষ কথা

সব মিলিয়ে ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, এতে শিক্ষার মান ও ন্যায্য মূল্যায়ন নিশ্চিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *